নিজস্ব প্রতিবেদ:
ময়মনসিংহের দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অস্বাভাবিক অনুপাতের পরও এইচএসসি ও সমমানের (আলিম) পরীক্ষায় চরম ফল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে।
নান্দাইলের বরিল্লাহ কেরামত আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বৈরাটি সিনিয়র আলিম মাদরাসা থেকে এবারের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৮ জন শিক্ষার্থীর কেউই পাস করতে পারেনি।
জানা গেছে, এই ৮ জন শিক্ষার্থীকে পড়ানোর জন্য দুই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ছিলেন কমপক্ষে ১০ জন।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বৈরাটি সিনিয়র আলিম মাদরাসায় মোট ২২ জন শিক্ষক থাকলেও আলিম বিভাগে ৭ জন শিক্ষক— চারজন আরবি, একজন বাংলা, একজন ইংরেজি ও একজন সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক— মাত্র ৩ জন শিক্ষার্থীকে পড়াতেন। এই ৩ জনই আলিম পরীক্ষায় ফেল করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রভাষক জানান, ওই তিনজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে চায়নি। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ সব ধরনের সহযোগিতা করে তাদের পরীক্ষায় বসতে বাধ্য করে। তারা সবাই ‘অটোপাস’ করে আসা শিক্ষার্থী ছিলেন।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে বৈরাটি সিনিয়র আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. শাহজাহানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরই তিনি কল কেটে দেন এবং পরবর্তীতে আর রিসিভ করেননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, মাদরাসা পর্যায়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় পাসের হার ৪২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। বৈরাটি আলিম মাদরাসার তিনজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কেউই পাস করতে পারেনি।
অন্যদিকে, ২০১৭ সালে নান্দাইলের জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত হয় বরিল্যা কেরামত আলী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ। ২০১৯ সালে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক ও বিজ্ঞান শাখার পাঠদানের অনুমতি পায় প্রতিষ্ঠানটি।
এখানকার মানবিক বিভাগ থেকে ৫ জন শিক্ষার্থী এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তাদের পড়ানোর দায়িত্বে ছিলেন ৩ জন শিক্ষক। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফলাফলে এই ৫ জনই ফেল করেছেন।
এই বিপর্যয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের প্রধান শিক্ষক রৌশমত আরা বেগম বলেন, শিক্ষার্থীরা নিয়মিত কলেজে না আসা এবং তাদের আগ্রহ কম থাকায় এমন ফলাফল হয়েছে। পাঁচজন শিক্ষার্থীই অনিয়মিত ছিল এবং তারা সবাই এসএসসিতে ‘অটোপাস’ করেছিল।